Open top menu
বৃহস্পতিবার, মার্চ ১৪, ২০১৩




প্রাণাধিক,
জীবনের প্রথম পত্রে নাম সম্বোধন করিতে পারিলাম না বলিয়া আপনজনের নিকট ক্ষমা চাইব কি, আপন অনুশোচনায় আপনি দগ্ধ হইতেছি। পরিচয় প্রকাশে অদৃষ্টের কালিমা যদি জীবনে লাগিয়া যায়, তাই সামান্য এই ছলনার আশ্রয় লইতেই হইল। আপনারা পুরুষজাতি, ইহা হয়ত তুচ্ছজ্ঞান হইবে; কিন্তু এক নারীর জীবনে এর যে কি চরমদর্শী পরিণতি হইতে
পারে, তা বোধ করি একজন নারীই আন্দাজ করিতে পারিবে। সে যাহাই হইক, সঙ্গত কারণেই পত্র পাইয়া আপনি বিস্মিত হইয়াছেন আন্দাজ করিতেছি। ভাবিতেছেন দুরন্ত রেলগাড়িতে পত্রবাহক আবির্ভূত হইল কি উপায়ে! সুস্থির হউন, বৃত্তান্ত যে বড়ই জটিল!
পত্রসম্মুখে অগ্রসর হইবার পূর্বে আশঙ্কা করিতেছি আপনি এই অভাগিনীর প্রতি অতিশয় চটিয়াছেন। আপনার তৎক্ষণাৎ প্রস্থান পর্যালোচনায় ইহাই বুঝিতে পারিলাম। অভিমান না হইলে আমার আগমন সংবাদ পাওয়া মাত্রই বা কেন আপনি শহর অভিমুখে যাত্রা করিবেন! না হয় বুঝিলাম যাইতেই হইবে, তাই বলিয়া ভ্রান্ত ধারণা লইয়া যাইবেন! উপলব্ধি করিলাম, এই ভ্রান্তি আমাকেই দূর করিতে হইবে। একইসঙ্গে বাড়তি দুটো পৃষ্ঠা পড়িতে যাত্রাপথে আপনার ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটিবে না তাহা একরূপে ধরিয়াই নিয়াছি।
আপনার হইতে দীক্ষা লইয়া যেই না ফিরিয়াছি ওমনি বাড়ি হইতে সংবাদ পৌঁছাইল স্বয়ং পালকপিতা শয্যায় কাতরাইতেছে। জানি না কি হইল। আর থাকিতে পারিলাম না। যাত্রার উদ্যোগ করিলাম। কিন্তু ভাগ্যদেবতার কঠিন হৃদয়, এই জগৎসংসারে ভ্রমণ যে কিছুতেই নারী সহায় নহে তাহাই মজ্জায় মজ্জায় অনুভব করিলাম। অবশেষে যখন পৌঁছাইলাম তখন সবই সাঙ্গ হইয়াছে। দেখিলাম পালকপিতার অধর জুড়িয়া রুধির ধারা জমাট বাধিয়াছে। লোকমুখে শুনিয়াছি পেটে পিলে হইয়াছিল। অবস্থাদৃষ্টে তথায় স্থবির হইহা বসিয়া পড়িলাম। বুঝি জ্ঞানকাণ্ড লোপ পাইয়াছিল। সেই শ্রীহীন দুর্গতি অবলোকন করিয়া গ্রামবাসীও ছাড়িল না, যদিও উহাদের সহিত কোন প্রকার রক্তের সম্পর্ক ছিল বলিয়া আমার জানা নাই। অতঃপর দুটি মাস যে কিরূপে কাটিল বলিতে পারি না। ধীরে ধীরে স্মৃতি ফিরিয়া পাইলাম। বিশ্বচরাচরে আপনাকেই প্রথমে স্মরণ হইল। আপনাকেই আপনজন পরিগণিত হইল। মনে বাজিল শুধু আপনারই কণ্ঠধ্বনি। এক্ষনে একমাত্র গন্তব্য কি তাও বুঝিলাম।
স্বীকার করিতেছি আপনাকে না জানাইয়া নিরুদ্দেশ হইয়াছিলাম কিছুকাল কিন্তু পালাইয়া যাইব কস্মিনকালেও ভাবিতে পারি না। তাছাড়া ফিরিয়া যে আসিলাম চিরতরে আপনারই জন্য। ভাবিলাম বাড়িতে আশ্রয় না হউক, আত্মার হৃদয়ে ঠাই তো ঠিকই মিলিবে। জানি আপনাকে বহু ক্লেশ দিয়া পালকপিতার অন্বেষণে গিয়াছি। কিন্তু আপনিই বলিয়া দিন অন্তর্যামী যাহাকে একাকী করিয়া পাঠাইয়াছেন, তাহার দুইকুলের একমাত্র পালকপিতা স্বর্গারোহণ করিলে তাহার কিরূপে শান্ত থাকা চলে?
যদি ভাবিয়া থাকেন বানাইয়া বানাইয়া মিথ্যাচার করিতেছি তবে নিজ কর্ণে সত্যতা যাচাই করুন। ইহার পর মহাশয় যে কোন প্রকার শাস্তিই ধার্য করিবেন, দেবতুল্য আদেশ বলিয়া মানিয়া লইব।
বলিতে পারি না এই পত্র আপনাকে প্রসন্ন করিয়াছে কি ক্লেশ বাড়াইয়াছে, ইহাও বলিতে পারি না এই পত্র আপনাকে ফিরাইয়া আনিতে পারিবে কি দূরে লইয়া যাইবে; তবে আপনার প্রত্যাবর্তন কালান্তরে শতাব্দী কিংবা মৃত্যুকে অতিক্রম করিলেও আমার যে ধৈর্য্যচ্যুতি হইবে না তাহা নিশ্চিন্ত থাকিতে পারেন।
অনেক কথা লিখিব মনে ভাবিয়াছিলাম। কিন্তু লোকটি তাগাদা দিতেছে। কালবিলম্বে রেলগাড়ি প্রস্থান করিবে যে! ফলে আপনাকেও যে হারাইতে হইবে! পত্র পৌঁছাইবার নিমিত্তে লোকটিকে রাজি করাইতে বেগ পাইতে হইয়াছে বৈকি। স্বার্থ বিনা এই অবলার জন্য কে করিবে বলুন? তাই অর্থ-সম্পদ না থাকিলেও আপনা কর্তৃক যে স্বর্ণ নির্মিত কর্ণাভরণ পাইয়াছিলাম বিনিময়ে উহাই সে যথেষ্ট বলিয়া মানিয়া লইল। মনঃপীড়া লইবেন না দয়া করিয়া। যদি আপনাকেই না পাইলাম তো এই স্বর্ণের কিই বা মূল্য!
ইতি
আপনার বিশেষ ক্ষমাপ্রার্থী 
লেখক-জায়েদ মোঃ রশীদ
উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০
Different Themes
Written by Templateify

Aenean quis feugiat elit. Quisque ultricies sollicitudin ante ut venenatis. Nulla dapibus placerat faucibus. Aenean quis leo non neque ultrices scelerisque. Nullam nec vulputate velit. Etiam fermentum turpis at magna tristique interdum.

Pages (20)1234 Next

0 মন্তব্য(গুলি)

Blogger templates

body, a:hover {cursor: url(http://cur.cursors-4u.net/cursors/cur-1/cur14.ani), url(http://cur.cursors-4u.net/cursors/cur-1/cur14.png), progress !important;}Orange Wavy Tail

Blog Archive

???? ?????????

সন্মানিত ভিজিটর আমাকে ফেসবুকে পাবেন FACEBOOk

aaa

Blogger templates

Subscribe via Email

Alexa Traffic Widgets

??????? ??????