Open top menu
সোমবার, মার্চ ১৮, ২০১৩


ভোরের শিশির ভেজা ঘাসের উপর হাটতে হাটতে অনেকটা পথ অতিক্রম করে ক্লান্তির আবেশ জড়িয়ে ধরলে নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারলনা ত্রিশ পেরুনো পরেশ। বসে ভাবতে লাগল ফেলে আসা জীবনের কথা। স্কুল-কলেজ জীবনে
সবাই তাকে কবি বলে ডাকতো কেননা কথার ফাঁকে ফাঁকে বেরিয়ে আসতো কতনা মনোমুগ্ধকর ছড়া-কবিতা। বন্ধুরা তাই হেয়ালী করেই কবি ডাকতে শুরু করলো। এই কলেজ লাইফেই ঘটে জীবনের বড় বিপত্তি। তার কবিতা ছেলে মেয়ে এমনকি কলেজের শিক্ষকরাও পছন্দ করতো। মেয়ে বন্ধুর মধ্যে কানিজ ছিল তার সবচেয়ে কাছের কবিতা পাগল ভক্ত। যদি কোন কবিতা তাকে দেখানো না হতো তবে, সারা দিন কোন কথা বলবে না। এটা যেন নিয়মিত রুটিন হয়ে গেছে। তাই মাঝে মাঝে মজা করার জন্য পরেশ নিজে থেকে কাজটা করে থাকতো।একবার কলেজের সব বন্ধুরা মিলে ১৪ ফেব্রয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিল। তৈরি করল ভালবাসা দিবসের কর্মসূচী। কর্মসূচির মধ্যে ছিলমুক্ত মতে ভালবাসার প্রকাশপ্রধান একটি আলোচ্য বিষয়। সেদিন ভোরের সূর্যটা নতুন আভা ছড়িয়ে ফুলে ফুলে ঢেলে দিল ভালবাসার পরশ আর ফুলগুলো ভালবাসায় সিক্ত হয়ে বাহারী রূপের সৌরভ সবার মাঝে ভাগ করে দিতে লাগল। পরেশ ছন্দ কবিতায় ভালবাসার আবেশ জড়িয়ে প্রকাশ করল স্বপ্নচারী ভালবাসার গল্প। মানুষের মনে কল্পনার কোন মানুষী থাকার মধ্যে তো কোন অস্বাভাবিকতা থাকতে পারেনা তবে কেন এই মনোস্বাধীনতা নিয়ে অভিমান! পরশ তার কল্পনামিশ্রিত ভালবাসার কবিতা পড়ার পর ঢলে পড়তে থাকে কানিজ। বিষয়টা তখন কেউ বুঝার চেষ্টা করেনি সবাই ধরাধরি করে তাকে নিয়ে গেল হাসপাতালে। ডাক্তার দেখানোর পর বলল, অসুবিধা নেই সব ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু ঘন্টা পেরিয়ে গেল জ্ঞান ফিরছে না। ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা নেয়ার পরামর্শ দিল। ঢাকায় নেয়ার পর চোখ মেলে তাকালো ঠিকই কিন্তু হারিয়ে ফেলল স্মৃতিশক্তি। পাশে থাকা পরেশকেও চিনছে না। চিকিৎসকের আশার বাণী নিয়ে সবাইকে ফিরতে হলো। সেটা তো অনেক আগের ঘটনা কিন্তু বর্তমান কানিজ কেমন আছে তার কি কোন খোঁজ রাখছে পরেশ! খবর না নিলে সে হতো বেঈমান-স্বার্থপর। তার মানে সে বেঈমান কিংবা স্বার্থপর কোনটাই নয়- সে হলো অপরাধী, ভালবাসা দিবসের অপরাধী। জীবনের বড় বিপত্তি আর হারানোর ঘটনাটা এই ভালবাসা দিবসেই হয়েছে, তাই এই ভালবাসা দিবসটাকে সে সহ্য করতে পারে না। কানিজের অবস্থা নিয়ে ভাবতে ভাবতে এক সময় পরেশ প্রতিজ্ঞা করে জীবনে আর সে কোন কবিতা লিখবে না। হারিয়ে যাবে জগৎ সংসার থেকে দূর কোন বনে, ভালবাসবে পাখি, বন আর চারদিকের পরিবেশকে। পরেশ হয়ে গেল অন্য ভুবনের বাসিন্দা চিন্তা আর চেতনায় একাকিত্বকে আপন করে নিল। উদাসীনতায় সময় কেটে যায়, আপন মনে কথা বলে বনের মুক্ত পাখি কিংবা পশুর সাথে, বৃক্ষের ছায়ায় আপন মনে ক্লান্তি ভুলে। মনুষ্যত্বের দায়িত্ব জ্ঞান তার ভেতরে খেলা করে কখনও কখনও। আবারও ভাবনার সাগরে ডুবে যায়, খোঁজতে থাকে অস্তিত্বের বন্ধন। অভিমানী হলেও তো পরেশ একজন রক্তে মাংসে গড়া মানুষ। ভেতরের মানবতাবোধ খুব বেশি ভাবিয়ে তোলে তাকে। এক সময় কানিজের না বলা ভালবাসার সূতায় টান পড়ে, তোলপাড় শুরু হয় হৃদয়ে আর বসে থাকতে পারে না। তরুন মুখে দাঁড়িতে কেউ তাকে চিনতে পারছে না। মনে পড়ে তার হারানো ভালবাসা কানিজকে, পা বাড়ায় ওদের বাড়ির দিকে। এতো চেনা বাড়ি অথচ আজ যেন অচেনা মনে হচ্ছে। বাড়ির চতুর পার্শে বাউন্ডারি করা, মাঝখানে লোহার গেইট। নক করলে, কেউ একজন বেরিয়ে এসে গেইট খুলে দিল। জিজ্ঞেস করল কাকে চান? উত্তর দিল কানিজ আছে? সাথে সাথে আবার গেইট বন্ধ হয়ে গেল। পরেশ শুধু গেইটের বন্ধ হওয়াটাই দেখলো কিন্তু কোন মন্তব্য করতে পারলো না
লিখেছেন- আবুল বাশার শেখ
ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি
সাপ্তাহিক একুশের কন্ঠ

Different Themes
Written by Templateify

Aenean quis feugiat elit. Quisque ultricies sollicitudin ante ut venenatis. Nulla dapibus placerat faucibus. Aenean quis leo non neque ultrices scelerisque. Nullam nec vulputate velit. Etiam fermentum turpis at magna tristique interdum.

Pages (20)1234 Next

0 মন্তব্য(গুলি)

Blogger templates

body, a:hover {cursor: url(http://cur.cursors-4u.net/cursors/cur-1/cur14.ani), url(http://cur.cursors-4u.net/cursors/cur-1/cur14.png), progress !important;}Orange Wavy Tail

Blog Archive

???? ?????????

সন্মানিত ভিজিটর আমাকে ফেসবুকে পাবেন FACEBOOk

aaa

Blogger templates

Subscribe via Email

Alexa Traffic Widgets

??????? ??????